সূরা আল-কাহফ | আল কুরআনের ১৮ তম সূরা | অর্থ: গুহা
Quran For Lifeline - A podcast by Quran For Lifeline
Categories:
আল কাহফ (আরবি ভাষায়: الكهف) । এই সূরায় কোরাইশদের তিনটি প্রশ্নের কথা এবং প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হয়েছে। এই সূরায় হযরত মুসা এবং হযরত খিযির এর ঘটনাটিও বর্ণনা করা হয়েছে। শ্রেণী: মক্কী সূরা, নামের অর্থ: গুহা, সূরার ক্রম: ১৮, আয়াতের সংখ্যা: ১১০, পারার ক্রম: ১৫ (১-৭৪ আয়াত) ১৬ (৭৫-১১০ আয়াত), রুকুর সংখ্যা: ১২ । বৈশিষ্ট্য: মুসলিম, আবু দাউদ, তিরমিযী, নাসায়ী ও মুসনাদে আহমদে হযরত আবুদ্দারদা থেকে বর্ণিত আছে যে, যে ব্যক্তি সূরা কাহ্ফের প্রথম দশ আয়াত মুখস্থ করে, সে দাজ্জালের ফেৎনা থেকে নিরাপদ থাকবে। মুসনাদে আহমদে হযরত সাহ্ল ইবনে মু'আযের রেওয়ায়েতে আছে যে, রসূলুল্লাহ্ বলেনঃ যে ব্যক্তি সূরা কাহ্ফের প্রথম ও শেষ আয়াতগুলো পাঠ করে, তার জন্যে তার পা থেকে মাথা পর্যন্ত একটি নূর হয়ে যায় এবং যে ব্যক্তি সম্পূর্ণ সূরা পাঠ করে, তার জন্যে যমীন থেকে আসমান পর্যন্ত নূর হয়ে যায়। রূহুল-মা'আনীতে হযরত আনাস -এর বর্ণিত রসূলুল্লাহ্ বলেনঃ সূরা কাহফ সম্পূর্ণটুকু এক সময় নাযিল হয়েছে এবং সত্তর হাজার ফেরেশতা এর সঙ্গে আগমন করেছেন। এতে এর মাহাত্ম্য প্রকাশ পায়। শানে নুযূল: ইমাম ইবনে জরীর তাবারী হযরত ইবনে-আব্বাসের রেওয়ায়েতে বর্ণনা করেনঃ যখন মক্কায় রসূলুল্লাহ্ -এর নবুওয়তের চর্চা শুরু হয় এবং কোরাইশরা তাতে বিব্রত বোধ করতে থাকে, তখন তারা নযর ইবনে হারেস ও ওকবা ইবনে আবী মুয়ী'তকে মদীনার ইহুদী পন্ডিতদের কাছে প্রেরণ করে। রসূলুল্লাহ্ সম্পর্কে তারা কি বলে, জানার জন্যে। ইহুদী পন্ডিতরা তাদেরকে বলে দেয় যে, তোমরা তাকে তিনটি প্রশ্ন করো। তিনি এসব প্রশ্নের সঠিক উত্তর দিলে বুঝে নেবে যে, তিনি আল্লাহ্র রসূল। অন্যথায় বোঝবে, তিনি একজন বাগাড়ম্বরকারী রসূল নন। (১) তাঁকে ঐসব যুবকের অবস্থা জিজ্ঞাস কর, যারা প্রাচীনকালে শহর ছেড়ে চলে গিয়েছিল। তাদের ঘটনা কি? কেননা, এটা অত্যন্ত বিস্ময়কর ঘটনা। (২) তাঁকে সে ব্যক্তির অবস্থা জিজ্ঞেস কর, যে পৃথিবীর পূর্ব ও পশ্চিম এবং সারা বিশ্ব সফর করেছিল। তার ঘটনা কি? (৩) তাঁকে রূহু সম্পর্কে প্রশ্ন কর যে, এটা কি? উভয় কোরাইশী মক্কায় ফিরে এসে ভ্রাতৃসমাজকে বললঃ আমরা একটি চূড়ান্ত ফয়সালার পরিস্থিতি সৃষ্টি করে ফিরে এসেছি। অতঃপর তারা তাদেরকে ইহুদী আলেমদের কাহিনী শুনিয়ে দিল। কোরাইশরা রসূলুল্লাহ্ -এর কাছে এ প্রশ্নগুলো নিয়ে হাযির হল। তিনি শুনে বললেনঃ আগামীকাল উত্তর দেব। কিন্তু তিনি ইনশাআল্লাহ্ বলতে ভুলে গেলেন। কোরাইশরা ফিরে গেল। রসূলুল্লাহ্ ওহীর আলোকে জওয়াব দেবার জন্যে আল্লাহ্র তরফ থেকে ওহী আসার অপেহ্মায় রইলেন। কিন্তু ওয়াদা অনুয়াযী পর দিবস পর্যন্ত ওহী আগমন করল না; বরং পনের দিন এ অবস্থায় কেটে গেল। ইতিমধ্যে জিবরাঈলও এলেন না এবং কোন ওহীও নাযিল হল না। অবস্থাদৃষ্টে কোরাইশরা ঠাট্টা-বিদ্রূপ আরম্ভ করে দিল। এতে রসূলুল্লাহ্ খুবই দুঃখিত ও চিন্তিত হলেন। পনের দিন পর জিবরাঈল সূরা কাহফ নিয়ে অবতর করলেন। এতে ওহীর বিলম্বের কারণও বর্ণনা করে দেয়া হল যে, ভবিষ্যতে কোন কাজ করার ওয়াদা করা হলে ইনশাআল্লাহ্ বলা উচিত।